অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,তার সরকার দেশে এবং বিদেশে বিশেষায়িত নার্সদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার জোগান দিতে তাদের প্রশিক্ষণকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।তিনি এই কথা বলেন,বুধবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর তেঁতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের ১ম স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,আমরা নার্সদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের নিজেদেরও এখন প্রচুর নার্সের দরকার।তাছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি সেখানেও আমাদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স দরকার হবে।ইতোমধ্যে বিদেশ থেকেও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসছি।বিদেশে যেমন প্রশিক্ষণ চলবে তেমনি দেশেও যেন শিক্ষার মানটা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয় সে ব্যবস্থাটাও আমরা নেব।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,এই গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান দেশের আরও ছেলে-মেয়েকে মহান সেবামূলক নার্সিং পেশায় আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে,আমরা চাই এই হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা রোগীরা পাবে এবং যা সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।এই সময় তিনি নবীন নার্স গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, কঠোর পরিশ্রম করে আর্ত মানবতার সেবায় আপনারা আপনাদের আজকের সার্টিফিকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাবেন।জরুরি রোগী আনা নেওয়ার জন্য সরকার এখানে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করে দিয়েছে।আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে সেবা দেওয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন,আগামীতে একটি মেডিকেল কলেজ আমরা প্রতিষ্ঠা করবো।ইতোমধ্যে সেজন্য হাসপাতালের পাশের খালের বিপরীত পাশে জায়গা নেয়া হয়েছে।আমরা সুন্দরভাবে এখানে একটি মেডিকেল কলেজ করতে চাই তাহলে পুরো জায়গাটি একটি স্বাস্থ্যসেবার হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।তিনি রুবিনা জেসমিন (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ), পোস্ট বেসিক’ র শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার (২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষ) এবং রীনা আক্তারকে (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) প্রধানমন্ত্রী পদক প্রদান করেন। ৭৯ জন শিক্ষার্থী,এর মধ্যে ৫৭ জন পোস্ট বেসিকের শিক্ষার্থী ১ম ব্যাচে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহ-সভাপতি শেখ রেহানা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েমন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন-মালয়েশিয়ার কেপিজে হেলথ কেয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজের উপাচার্য এবং স্কুল অব মেডিসিন বিভাগের ডীন অধ্যাপক ড. দাঁতো লোকমান সাইম।শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের সিইও অধ্যাপক তৌফিক বিন ইসমাইল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।গ্রাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীগণের মধ্য থেকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম ও অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন।প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বাগত সঙ্গীতের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন অনুষ্ঠানের শুরুতে।পরে প্রধানমন্ত্রী এবং শেখ রেহানা গ্রাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন।প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দুটি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি দেন,এনার্জি প্যাক লিমিটেড শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের জন্য।উল্লেখ্য,২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দাঁতোসেরি মোহাম্মদ নজিব বিন তুন আব্দুল রাজাক বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ট্রাস্টের সহ-সভাপতি শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে এই হাসপাতাল উদ্বোধন করেন এবং বর্তমান নার্সিং কলেজটির যাত্রা শুরু হয় ৮ এপ্রিল ২০১৫ সালে।
বি: দ্র: তথ্য / ছবি সংগ্রহকরা