
অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট নাগরিক প্রয়োজন উল্লেখ করে আজকের শিশুদের মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ,তারাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট জনগোষ্ঠী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,আমি আজকের শিশুদের এইটুকুই বলবো যে,খেলাধুলা,শরীরচর্চা,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা,শিক্ষকদের কথা মান্য করা,অভিভাবকদের কথা মান্য করা এবং প্রতিটি শিশুকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।সবাইকেই উন্নত মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন হতে হবে।যারা প্রতিবন্ধী বা অক্ষম তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাগাড়ায় শুক্রবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায়।জাতীয় শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন,শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,স্মার্ট বাংলাদেশে কোন শিশুই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবেনা,কোন মানুষই ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবেনা।দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হবেনা,প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করে বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আজ আমাদের মাঝে নেই,কিন্তু তাঁর আদর্শ আছে।সেই আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ,উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।তাঁর সরকার শিশুদের সুরক্ষার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি।আগামীতে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই এবং আজকের শিশুরাই হবে সেই আগামী দিনের স্মার্ট জনগোষ্ঠী।যারা এই বাংলাদেশকে গড়ে তুলবে।প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে আজকের শিশুদের উন্নত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,জাতির পিতা যেমন ফুটবল খেলতেন,তাঁর দাদাও খেলতেন আর আমার ভাইয়েরা তো খেলতেনই।এমনকি ছেলে-মেয়ে এবং নাতি-পুতিরাও খেলাধুলা করে।এ জন্য তাঁর সরকার আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতার নানারকম ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলা-ধুলায় অংশগ্রহণ করলে শরীর ভালো থাকবে, মনমানসিকতা ভাল থাকবে এবং সবাই একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে গড়ে উঠবে।সেটাই আমি চাই।অন্ধকে অন্ধ বলিও না,আর পঙ্গুকে পঙ্গু বলিও না-এটাতো ছোটবেলার শিক্ষা,কাজেই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।আমরা তাদেরকে ভাতা দেই এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বৃত্তিও দিয়ে থাকি।কাজেই সকলেই একই সমাজের, সকলেই একই সংসারের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,জাতির পিতা শিশুদের ভালবাসতেন এবং শিশুদের জন্য তাঁর অত্যন্ত দরদ ছিল এবং শিশুদের সঙ্গে খেলা করতেও তিনি ভালবাসতেন।এজন্য তাঁর জন্মদিনকে আমরা জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছি কারণ,শিশুরা আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত এবং তারা যেন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।শিশুদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ছোট্ট স্বপ্নিল বিশ্বাস।শিশু প্রতিনিধি স্নেহা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দুই শিশু রুবাবা তোহা জামান ও এ এল শরফুদ্দিন।শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত চিত্রাঙ্কন এবং জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী,কারাগারের রোজনামচা ও জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতা এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমানের লেখা শিশুদের শেখ মুজিব শিরোনামের একটি সচিত্র বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।এছাড়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা থেকে নির্বাচিত সেরা চিত্রকর্মটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারক হিসেবে উপহার দেওয়া হয়।এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে ১শ অসচ্ছল শিক্ষার্থী আর্থিক অনুদান হিসেবে প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে লাভ করেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-মন্ত্রিপরিষদ সদস্য,সংসদ সদস্য,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ছবি: সংগৃহীত