অনলাইন ডেস্ক: গত ১০ বছরে বাংলাদেশের চমৎকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা দিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি।রাষ্ট্রদূত বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে আর্থসামাজিক খাতে,বিশেষ করে জিডিপির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে চমৎকার উন্নয়নে সাফল্য অর্জন করেছে।বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা দিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ কার্যালয়ে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এই ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জাপানের রাষ্ট্রদূতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন,জাপানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগে আগ্রহী।তিনি বলেন,জাপানের বহুজাতিক গাড়ি নির্মাতা মাজদা মটর করপোরেশন বাংলাদেশে একটি অটোমোবাইল প্ল্যান্ট স্থাপনে আগ্রহী।রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন,জাপান বাংলাদেশে একটি এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনেও আগ্রহী।রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে বলেন,এই ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতি সব সময় আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। তিনি মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া না দেওয়ায় এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি রোহিঙ্গা সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন।তিনি বলেন, বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা খুবই প্রশংসনীয়।প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহায়তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন,স্বাধীনতার পর থেকে জাপান দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।এই প্রসঙ্গে তিনি মেট্রোরেল,মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে জাপানের সহায়তার বিশেষ প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,এতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বাড়বে।এই প্রসঙ্গে তিনি এতদাঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ আরো বৃদ্ধিতে বিসিআইএম ও বিবিআইএন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,তার সরকার কক্সবাজারের সাবরাংয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠায় জাপানকে জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। জাপান সেখানে সমুদ্র সৈকতও করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে,বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে তাদের রাজি করানোর জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন,এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট বোঝা।মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের এখান থেকে ফেরত নিতে হবে।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন,জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।জবাবে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন,বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে জাপানের জন্য একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।